কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যা রয়েছে অথবা নেই, সবার জন্য উপকারী নির্দিষ্ট পরিমাণের কফি।
#নয়াদিল্লি: প্রতিবছর শুধু হার্টের রোগে অসংখ্য মানুষ প্রাণ হারান। তাই এই ঘাতক রোগটির থেকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। এর মধ্যেই বর্তমানে একটি গবেষণায় উঠে এসেছে চমকে দেওয়া তথ্য। বলা হয়েছে, প্রতিদিন দুই থেকে তিন কাপ কফি খেলে তা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
আমেরিকান কলেজ অফ কার্ডিওলজির ৭১তম বার্ষিক অনুষ্ঠানে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে এই দাবি করা হয়েছে।কার্ডিওভাস্কুলার সমস্যা রয়েছে অথবা নেই, সবার জন্য উপকারী নির্দিষ্ট পরিমাণের কফি।
গবেষকদের মতে, কফি আসলে হৃদরোগ থেকে অব্যর্থ ওষুধ। গবেষক এবং অস্ট্রেলিয়ার আলফ্রেড হসপিটাল এবং বেকার হার্ট ইন্সটিটিউটের অ্যারিথমিয়া রিসার্চের প্রধান পিটার এম কিস্টলারের কথায়, ‘কফি খেলে হৃদস্পন্দন দ্রুত হয়। তাই অনেকে মনে করতেন এটা হার্টের জন্য খারাপ হতে পারে।
সেই জন্যই হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তিদের কফি খেতে মানা করা হত। চিকিৎসকরাও তেমন পরামর্শই দিতেন। কিন্তু আমাদের তথ্য বলছে কফি খাওয়া বন্ধ করা উচিত নয়।
স্বাস্থ্যকর ডায়েটের অংশ হিসেবে কফি রাখা উচিত। আমরা দেখেছি কফিপানের অভ্যেস কোনও ক্ষতি করে না। বরং হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য এটা ভাল’।
দিনে কতবার কফি খাওয়া হয় তার ভিত্তিতে একাধিক ক্যাটাগরি করেছিলেন গবেষকরা। কফিপানের অভ্যাসের সঙ্গে অ্যারিথমিয়া অর্থাৎ হৃদযন্ত্রের গতির সমস্যা, কার্ডিওভাস্কুলার সংক্রান্ত সমস্যা যেমন করোনারি আর্টারি ডিজিজ-এর সম্পর্ক বা যোগসূত্র খোঁজার চেষ্টাও করা হয়। দুই ধাপে হয় এই গবেষণা।
প্রথমে হৃদযন্ত্র সংক্রান্ত কোনও সমস্যা নেই এমন ৩ লক্ষ ৮২ হাজার ৫৩৫ জনের উপর গবেষণা করা হয়। প্রায় দশ বছরের তথ্যের উপর ভিত্তি করে গবেষণা হয়েছে।
অংশগ্রহণকারীদের গড় বয়স ৫৭ বছর। এবং তাঁদের মধ্যে অর্ধেক মহিলা ছিলেন। পরের ধাপে ৩৪ হাজার ২৭৯ জনের উপর সমীক্ষা করা হয়ে, যাঁদের আগে থেকেই কার্ডিওভাস্কুলার রোগ ছিল।
প্রতিদিন ২ থেকে তিন কাপ কফি খেলে করোনারি হার্ট ডিজিজের ঝুঁকি ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কমে যায়। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও কমে। যাদের হৃদরোগ বা অ্যারিথমিয়া রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রেও দিনে এক থেকে দু’কাপ কফি পান করলে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটাই কম থাকে বলে জানাচ্ছেন গবেষকরা।
কফির মধ্যে ক্যাফেইন তো থাকেই, তার সঙ্গেই আরও বহুরকমের জৈব যৌগ থাকে যা শরীরের জন্য উপকারী। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কফি খাওয়া উচিত না। সেকথাও স্পষ্ট জানাচ্ছেন তাঁরা।
গবেষকরা বলছেন, দিনে এক থেকে দুই কাপ কফি খাওয়া যেতে পারে। কোনও অসুবিধে নেই। তবে খেতে হবে দুধ আর চিনি ছাড়া। আর একান্তই দুধ-চিনি মেশাতে হলে কম করে। তাহলেই মিলবে কফির গুণ।